সাংস্কৃতিক জীবন এবং বাস্তবতা সম্পর্কে ইসলামের দেওয়া বিধান কী?
![]() |
★❝শরহে আল মুসাফির ভয়েজ অফ মুসলিম মিডিয়া❞★ |
কোরআনের কোথাও গান-বাজনা হারামের কথা নেই। এ বিষয়ে প্রমাণ দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা বাজেট ধরলা
এই কথা বলার পর সূফী বাউল শরীয়ত সরকারকে ধর্মীয় অনুভূতিতআঘাত হানার অপরাধে বাংলাদেশ পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। এটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমগুলোর দেওয়া তথ্য। এখন সংক্ষেপে কিছু তথ্য আমি দিই-
- মসজিদের হুজুররা ১৩০০ টাকা বেতনের চাকরি করে আজান দেয়। সেই টাকা দিয়ে সংসার চালায়। বানরের মত চুক্কা টুপি মাথায় দিয়া ঘুরে, আর শালারা বলে হারাম হারাম। যারা নামায পড়ে সেজদা দিয়া কপালে কালো দাগ করে, তাদের কপাল থেকে ১১৩টি কিড়া বের হয়। নামায পড়ে যে নূর হয়, সেইগুলি হুজুরদের পায়ুপথে বের হয়। নবীই আল্লাহ, আল্লাহই নবী, যেই মুরশেদ- সেই রসুল এই কথাতে নেই কোন ভুল বলেন- লালন ফকির।
- ২৩ প্রকার বাদ্যযন্ত্র বাজানো জায়েয।
- বিদআত খারাপ জিনিস না। হুজুররা বলে বিদআত করা যাবে না। তাই যারে তারে হুজুর বলা যাবে না।
- সূফী পীর অন্তর্যামী।
- খাজা বাবা আল্লাহ, নবী, বেহেশত, দোযখ সব দেখছেন।
- নবী নিজেই আল্লাহ, তিনি বলেছেন, “যে আমারে দেখছে তার আল্লাহ দেখার বাকি নাই।”
- আর সেই নবীরে কয় মাটির নবী। এইগুলারে(হুজুরদের) আপনারা রাখেন কেন? সবার আগে পীর ধরতে হবে, মুরীদ হইতে হবে।
- গান-বাজনা করবেন, পক্ষে থাকবেন, পীর না ধরলে মুসলিম হইতে পারবেন না।
- নবী গান না শুনে ঘুমাইতোই না। আবু মূসাকে তিনি বললেন, তুমি কাওয়ালি গাও, শামা গাও। দাঊদের যন্ত্রগুলা তোমারে দিলাম।
- দাঊদ নবী বাঁশি না বাজাইলে হাশর শুরুই হবে না। সূরা সাবার ৯ নং আয়াতে এ কথা আছে। উনি নবী না বয়াতি।
- বাবা-মায়ের পায়ে চুম্বন, সিজদাহ করা জায়েয।
- আল্লাহকে সিজদাহ দিও না, আল্লাহ তোমার সিজদার মালিক না, সিজদাহ দিও তোমার গুরুকে, গুরুর সিজদাহ ফরয এ কেফায়া, ডবল ফরয।
কখনো আল্লাহকে স্রষ্টা বলছে তো কখনো নবীকে আল্লাহ বলছে, আবার বলছে গুরুই পরম ব্রহ্মা। নবীকে আল্লাহর ছায়া, কায়া বলছে। এটি অবতারবাদ, স্রষ্টার বিভিন্নরূপ। কারণ-
বাউলেরা গুরুবাদী। গুরুকে এরা ঈশ্বর বা আল্লাহর অবতার বলে জানে। এরা বিশ্বাস করে যে গুরু অসন্তুষ্ট হলে তার ইহকাল, পরকাল সবই বিনষ্ট হতে পারে। গুরুকে তুষ্ট করাই এদের সাধনার অঙ্গ। [বাংলাদেশের বাউল:সমাজ, সাহিত্য ও সংগীত, আনোয়ারুল করীম, লালন একাডেমী, ১৯৮০, পৃ.১০০]
বাউলদের ধর্ম গড়ে উঠেছে কামাচার এবং মিথুনাত্মক যোগ-সাধনাকে(Erotic love) কেন্দ্র করে। এর চেয়ে ভদ্র ভাষায় এই দেহতত্ত্বকে বোঝানো সম্ভব নয়। তাই
- দেহ এবং যৌনাচার এদের কাছে ঐশ্বরিক, দেহের বাইরে কিছুই নেই। এখানেই আল্লাহ, নবী, কৃষ্ণ, ব্রহ্মা, পরমাত্মা একাকার।
- সেবাদাসী ও রতিনিরোধী যৌন মিলন ব্যতীত সাধনা অসম্ভব। দাসীর সংখ্যা এক থেকে একাধিক এবং একেকজনের সঙ্গিনী আরেকজনের সাথে মিলন করে সাধনার উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছুবে এটিই উদ্দেশ্য।
স্ত্রী জননাঙ্গই সাধনার লৌকিক স্তরের মৌলবিন্দু। এখানেই মীনরূপে সাঁই(প্রভু/গুরু) বিহার করে। এটিই বাউলদের বারযাখ। তাই বাউল ভক্তি নিবেদন করে এই যোনিপ্রদেশকে। এখানেই তার সিদ্ধি। এই স্তর পার করতে পারলেই সে সাধক। [প্রাগুক্ত, পৃ.৪১৬]
গানের দ্বারা তারা ধর্ম প্রচার করে থাকে। কিন্তু এসমস্ত গানের বিষয় সাধারণ মানুষ বুঝতে না পারার কারণ হলো সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার। তারা বলে এক, অর্থ আরেক। যেমন তাদের এই সাধনার স্ত্রীজননাঙ্গকে তারা গানের মধ্যে “ত্রিবেণী” বলে ডাকে।
এই ত্রিবেণীকে বাউল “আরশীনগর” হিসেবেও অভিহিত করেছে। “আরশী” অর্থ আয়না। স্ত্রীযোনিতে রতিক্রিয়া বলে যে রসের সৃষ্টি তা পানিরূপ। পানিতে নিজের চেহারা যেমন দেখা যায় তেমনি রস-রতিরূপ পানিদ্বারা পিতামাতার চেহারার আদলে সৃষ্টি হয়। [প্রাগুক্ত, পৃ:৪১৯]
খেয়াল করে দেখুন, উক্ত শরীয়ত সরকারও বলেছে,
কোরআন খুললে একটা আলিফ। মানবদেহে চারটি আলিফ আছে। আর আমার বাবা যা দিয়া আমাকে তৈরি করছে সেইটাও আলিফ…আলিফ সত্তা ও্ মীম সত্তাই আসল। সেজাদাও দিতে হয়, মীমসত্তা আলিফ সত্তা নিয়াই। তাই লালনের মনের মানুষ- অধর মানুষ- দিব্য মানুষ- সহজ মানুষের কথা বলেন।
এখানে অক্ষরকে সংকেত হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। বাউলেরা আরবি হরফ আলিফ, লাম, মীমকে তাদের দেহবাদী সাধনার তিনটি সাংকেতিক ভাবনার সাথে জুড়ে দিয়েছে। এইসব ইসলামি পরিভাষা ব্যবহার করে তারা মানুষকে ধোঁকা দেয়। তারা তাদের ধর্মের প্রচারও করে আবার এদিকে কেউ তা ধরতেও পারে না। বাউল বিশ্বাস হলো, শুক্র বা বীজরূপী সাঁই মানুষের মধ্যেই থাকে। এটিকে বিন্দুসাধনা বলে। বিভিন্ন সময়ই তাই লামকে সাধনসঙ্গিনী এবং আলিফকে শুক্রাণুর পরিভাষা হিসাবে ব্যবহার করতে দেখা গেছে। [প্রাগুক্ত, পৃ.৪২৮-৪২৯]
অধ্যাপক আনোয়ারুল করীম এবং বাংলাপিডিয়ার সূত্রে এ কথা সহজেই জানা যায় যে, প্রাচীন ফিলিস্তিনে বা’ল নামের এক দেবতার উপাসনা করা হতো। বা’ল প্রজনন-দেবতা হওয়ায় মৈথুন এই ধর্মের অংশ হয়ে পড়ে। তাদের সাধন মাত্রই যৌনাচার। বাউল শব্দটি বাংলায় প্রবেশের এটিও একটি উৎস বলে ধরা হয়। পারস্যে অষ্টম-নবম শতকের দিকে এই বা’ল নামে সূফী সাধনার একটি শাখা গড়ে ওঠে। তারা ছিল সঙ্গীতাশ্রয়ী এবং মৈথুনভিত্তিক গুপ্ত সাধনপন্থী। মরু অঞ্চলে তারা গান গেয়ে বেড়াত। সেই লোকধর্ম থেকেই এক সময় বাংলায় প্রবর্তিত হয় এই বাউল ধর্ম।
বাউল একটি ধর্ম সম্প্রদায়। বাউলদের ধর্মের তত্ত্ব ও দর্শন আছে, সাধন-পদ্ধতি আছে। এই সময়ের সাধকগণের তত্ত্ব-দর্শন ও সাধনা সংবলিত গানই প্রকৃত বাউল গান।[বাংলার বাউল ও বাউল গান, উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য(১৯৫১), পৃ.১০৩]
…অনুসারীদের একটি অংশ ১৯৮৬ সালের মার্চ মাসে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের দপ্তরে একজন মুসলমান অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা বাউল। আমাদের ধর্ম আলাদা। আমরা না-মুসলমান, না-হিন্দু। আমাদের নবী সাঁইজি লালন শাহ। তাঁর গান আমাদের ধর্মীয় শ্লোক। সাঁইজির মাজার আমাদের তীর্থভূমি।…আমাদের গুরুই আমাদের রাসুল। …ডক্টর সাহেব আমাদের তীর্থভূমিতে ঢুকে আমাদের ধর্মীয় কাজে বাধা দেন। কোরান তেলাওয়াত করেন, ইসলামের কথা বলেন… এ সবই আমাদের তীর্থভূমিতে আপত্তিকর। আমরা আলাদা একটি জাতি, আমাদের কালেমাও আলাদা –লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লালন রাসুলুল্লাহ। [ব্রাত্য লোকায়ত লালন(১৯৯৮), সুধীর চক্রবর্তী, পৃ.৪-৯৫]
তাই এ কথা ভুলে যাওয়া চলবে না যে বাউল একটি আলাদা ধর্ম। বিভিন্ন খানকা, মাজার আর পীর-মুরীদি হলো তাদের ধর্মচর্চা কেন্দ্র, পদ্ধতি। আর গান হচ্ছে তাদের ধর্মপ্রচারের একমাত্র পন্থা। কাজেই এর মাঝেই যে তাদের সকল প্রয়াস নিবদ্ধ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। গান-বাজনার উপর কোনো আঘাত তারা সহ্য করবে না।
ইসলাম যার যার ধর্ম পালনে বাঁধা দেয় না। স্বাধীন বাংলাদেশে সবাই যে যার ধর্ম এবং রাজনৈতিক মতবাদ প্রচার করতেও স্বাধীন। কিন্তু সমস্যা তখন সৃষ্টি হবে যখন বিএনপির প্রধান কার্যালয় নতুন করে রঙ করে আওয়ামী লীগের পতাকা টানিয়েই তারা দাবি করবে – “আমরাও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন তার প্রমাণ কী? ৫০ লক্ষ টাকা বাজি ধরলাম। সংবিধানের কোথায় লেখা আছে? শেখ মুজিব তা পাঠ করেন নাই, করেছিলেন জিয়া। জিয়ার মাঝেই মুজিব ছিলেন। তাই যিনি মুজিব, তিনিই জিয়া। মুজিব সর্বব্যাপী। মাসে মাসে বেতন নেয় আর শালারা বলে বিএনপি নাকি ইতিহাস বিকৃতি করছে। কাজেই, নেতাদের কথা শোনা যাবে না। জিয়াকে ঘোষক মানতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিবাদ করে রাজনীতির জন্য শহীদ হয়ে যাব। কিন্তু জিয়াকে মুজিব না মানলে প্রকৃত আওয়ামীলীগ হওয়া যাবে না।”
এটি কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাকি মিথ্যা প্রচারের স্বাধীনতা? এটি কি শিল্প নাকি ফলস প্রোপাগান্ডা? অথচ হুবহু এধরনের কথাই শরীয়ত সরকার ইসলাম সম্পর্কে বলে গেছে।
পরিতাপের বিষয় এই যে, সূফী সাধকের মুখ নিঃসৃত বাক্যগুলো আমি জাতীয় দৈনিকে অনেক খোঁজার চেষ্টা করেছি। প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বিবিসিসহ কোনো শীর্ষ সংবাদপত্রেই আমি তার বক্তব্য খুঁজে পাইনি। পেয়েছি “কুরআনকে চ্যালেঞ্জ করায় বয়াতি আটক”, “গান-বাজনা হারাম না বলায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত”- ধরনের সূক্ষ্ম প্ররোচনা এবং পৃষ্ঠপোষোকতামূলক শিরোনাম।
অথচ সাধারণ মুসলিম তরুণ এবং প্রগতিশীল সমাজ যারা আজ বয়াতির মুক্তি চেয়ে আন্দোলন করছে তাদের কাছে কি আদৌ সত্য এবং পরিপূর্ণ সংবাদ পৌঁছেছে? যদি না হয়, তাহলে কেন পৌঁছেনি? প্রচারমাধ্যমগুলোর এহেন আচরণ কি কাকতালীয়? কুরআন বিকৃতি, বানোয়াট হাদিস, হারামকে হালাল, নবীকে আল্লাহ বলা, আলেমদের নিয়ে বিদ্বেষাগার, দিনে দুপুরে বাউলদের মিথ্যাচার – এসবের বদলে পেয়েছি “মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ,” “ধর্ম নিয়ে ব্যবসা”, “শিল্পের অবমাননা”, “কট্টরপন্থীদের রোষানলে সংস্কৃতি” ইত্যাদি গভীর উষ্মা।
আমাদের সবার আদর্শ এক না হতে পারে। কিন্তু তাই বলে কি আমরা মিথ্যা বলাকে অধিকার জ্ঞান করব? বাউলরা জেনে বুঝে এমনটি করে আসছে যুগ যুগ ধরে। তাদের একমাত্র ধর্মপ্রচারের মাধ্যম গানে তাই ইচ্ছাপূর্বক ধর্মীয় পরিভাষা ব্যবহার করা হয়ে আসছে। যার অর্থ ভিন্ন হলেও সাধারণ মানুষ যাতে তা ধরতে এবং বিরুদ্ধাচারণ না করতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ সবার চেনা লালন ফকিরের দুই চরণ আধ্যাত্মিকতার নমুনা লিখছি-
বাড়ির পাশে আরশীনগর,
সেথা এক পড়শী বসত করে।এখানে “আরশীনগর” স্ত্রীজননাঙ্গের প্রতীক। “পড়শী” অর্থ বাউলের সাঁই যার অবস্থান স্ত্রীজননাঙ্গে। এই যৌনাচারগুলি বাউল অত্যন্ত চমৎকারভাবে প্রতীকের মাধ্যমে ঢেকে রেখে তাকে শিল্পসুষমামণ্ডিত করে তুলেছে। বাউলেরা সাধারণের মধ্যে তাদের এই (যৌন)সাধনাকে গোপন রাখার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আরবি হরফকে তাদের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের প্রতীক হিসাবেও ব্যবহার করেছেন। [বাংলাদেশের বাউল, পৃ.৪৩০]
বিস্ময় জাগছে? প্রতারিত মনে হচ্ছে? মরমী, মারিফতি, আধ্যাত্মিকতা, সূফীবাদী, সংস্কৃতিপ্রেমীদের স্বরূপ উন্মোচিত হয়ে যাচ্ছে? এখানেই শেষ নয়। আমার লিখতে রুচিতে বাধছে তবু তাদের গানে “গরল” মানে রজঃস্রাব। স্রাব শেষে যে রতি নির্গত হয় তাকে “ফুল” বলে, এর মাঝে সাঁই থাকে। “নীর ও ক্ষীর” হলো যথাক্রমে নারী ও পুরুষের বীর্য, একটি হালকা, একটি ঘন, দুই মিলে তাদের সাধনার সুধারস। “রস” বলতে উভয়ের বীর্যকে বুঝায়, মূত্রও বুঝায়। এই রস দিয়ে সৃষ্টি হয়, তাই রসের জ্ঞান সাধনায়(মিলন) সিদ্ধি ঘটে।
“অমাবস্যা” বলতে নারীর ঋতুবতী কালকে বুঝানো হয়েছে, এটি তাদের ‘মহাযোগের’ সময়, এসময় সাঁই অবতীর্ণ হয়। আবার সকল সংখ্যার মাঝে সংকেত লুকানো। যেমন: “তিন” মানে ত্রিবেণী, “চার”- মল, মূত্র, রজঃ, শুক্র, “পাঁচ”- চুম্বন, মর্দন, শোষণ, স্তম্ভন, সম্মোহন ইত্যাদি। [বাংলার বাউল ও বাউল গান, পৃ.৩৬৯-৪৩৭]
এরকম দেহতত্ত্বের সাংকেতিক শব্দে গাঁথা তাদের তথাকথিক আধ্যাত্মিকতা। এবার তাদের গানগুলো খেয়াল করে দেখবেন। এ কথাগুলো সরাসরি বাউল গুরুদের কাছ থেকে নেওয়া। যে সকল দলিল পেশ করা হয়েছে তারা সবাই বাংলাদেশ এবং কোলকাতার নামযশা বাউল গবেষক।
আমার জানা মতে শুধু ইসলামই নয় বরং সকল ধর্ম এবং মতবাদেই মুখে এক, অন্তরে আরেককে নিফাক বা ভণ্ডামি বলা হয়। কিন্তু বাউল ধর্মে তাদের নিষ্কাম নারীভোগ এবং সঙ্গমসাধনার মাঝে সিদ্ধিলাভের বিবরণকে সরাসরি প্রকাশ নিষেধ। তাই তারা আধ্যাত্মিকতার ধর্মীয় লেবাস ধার করে নিয়েছে। এই ধরনের ধর্মীয় বিশ্বাস শিয়াদের মাঝেও পরিলক্ষিত হয়। তাদের “তাকিয়্যা” এবং “কিতমান” অনুযায়ী নিজের মতবাদ প্রকাশ করা নিষেধ; বরং যা বিশ্বাস করে ঠিক তার বিপরীত্টি প্রকাশ করবে প্রয়োজনে। সেই ইরানের শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চলের সূফী বা’ল সম্প্রদায় থেকে বাংলার বাউলরাও এই নীতি গ্রহণ করেছে সম্ভবত। লালন একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা ডঃ আনোয়ারুল করীম তার ৭২৬ পৃষ্ঠার পাণ্ডুলিপির শেষে বলেছেন,
বাউলসাধনা অত্যন্ত গুপ্ত এবং কেবল দীক্ষিতদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। দীর্ঘ ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে বিভিন্ন বাউল-ফকিরদের সঙ্গে চলে-ফিরে আমি যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছি, তার সংক্ষিপ্তসার এখানে উল্লেখ করলাম। বাউলদের ধর্মানুসারে এসব তথ্য প্রকাশ মহাপাপ সমতুল্য। তথাপি গবেষণার স্বার্থে আমি এসব তথ্য প্রকাশে সাহসী হয়েছি। [বাংলাদেশের বাউল, পৃ.৬৭৫]
কাজেই বিভিন্ন গানে মোকাম, মঞ্জিল, আল্লাহ, রাসূল, আনাল হক, আদম-হাওয়া, মুহাম্মদ-খাদিজাসহ বিভিন্ন আরবি পরিভাষা, আরবি হরফ শুনলেই তাদের বিরাট পীর, মুর্শিদ, নীরিহ আধ্যাত্মিক জগতের মুসলমান ভাবার কোনো কারণ নেই। এগুলোর আমাদের জন্য ধোঁকার উপকরণ। যেমন
আলিফ হয় আল্লাহ হাদী
মীমে নূর মুহম্মদী
লামের মানে কেউ করলে না
নুক্তা বুঝি হল চুরি।
নূরের মানে হয় কুরআনে,
নূরবস্তু সে নিরাকার প্রমাণে,
কেমন করে নূর চুঁয়ায়ে হায় সংসারে
এটি দেখে লালনকে মনের মানুষ, ইসলামি সূফী সাধক উপাধি দিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এটিই তাদের লক্ষ্য ছিল। তাহলে ব্যাখ্যাটি জেনে নেওয়া যাক –
বাউল সাধনায় “নুক্তা” অর্থ বীর্য… লালন নুক্তাকে নূররূপেও চিহ্নিত করেছে। নুক্তার সাধারণ অর্থ বিন্দু। এই বিন্দুর স্বরূপ সঠিকভাবে নিরূপণ করাই বাউল সাধনার লক্ষ্য। এই বিন্দুই পুরুষের বীর্য। এই বীর্যকে বাউল “নূর” বলে উল্লেখ করেছে। এই নূর চুঁইয়েই জগৎসংসার। [বাংলাদেশের বাউল, পৃ.৪২৯]
তবে সূফীবাদ এবং বাউল ধর্মের ভিতর সাদৃশ্য, বৈসাদৃশ্য দুই-ই আছে। কিন্তু তা কোনোভাবেই মতবাদ হিসাবে এগুলোকে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করে না। সূফীবাদের মাঝেও দেহের মধ্যে পরমাত্মা বা স্রষ্টার উপস্থিতিকে স্বীকার করা হয়। এর চূড়ান্ত অবস্থায় নিজেকে ঈশ্বরের পর্যায়ভুক্ত করা হয়। একে অপরের মাঝে “ফানা” হয়ে যায়। যেমন
নবী চিনে করো ধ্যান।
আহাম্মদে আহাদ মিলে আহাদ মানে ছোব্বাহান।“আহমাদ” হইতেছেন মুহম্মদ এবং “আহাদ” হইতেছেন আল্লাহ। ফকিরগণ বলিতে চাহেন যে মুহম্মদ ও আল্লাহয় কোনো প্রভেদ নেই। আল্লাহ আকৃতিহীন, কিন্তু তিনি মুহম্মদের মধ্যে আকৃতি ধরিয়া অবতীর্ণ হইয়াছেন এবং আদমের মধ্যেও তিনি আকৃতি ধরিয়া অবতীর্ণ হইয়াছেন। অর্থাৎ মানুষ ভগবানের প্রতিচ্ছবি এবং মানুষের মধ্যেই ভগবানের প্রকাশ। মানুষই ভগবান। ইহা যে সূফী মতের প্রধান কথা, তাহা আমি পূর্বে দেখিয়াছি। [বাংলার বাউল ও বাউল গান, পৃ.৫০৭]
ইসলামের ভাষায় প্রকৃত সূফী আর প্রচলিত সন্ন্যাসী সূফীদের মাঝে যোজন-যোজন দূরত্ব। এখানেও ইসলামি পরিভাষাকে হাতিয়ার করা হয়েছে। অধুনা সূফীবাদ মতে,
ভগবান সম্বন্ধে জ্ঞান বলিতে ইহা বুঝায় না যে, ভগবান এক ও অদ্বিতীয়… ভগবৎ সত্তার পূর্ণজ্ঞান কেবল ভগবদভক্ত সাধুগণেরই লভ্য। তাহারা তাদের হৃদয়ের মাঝে ভগবানকে দর্শন করেন। ভগবান পৃথিবীর অন্যত্র কোথাও আত্মপ্রকাশ করেন না, কেবল তাঁহাদের নিকটই পূর্ণসত্তা প্রকাশ করেন। [তাযকিরাতুল আউলিয়া, ১/৫]
তাদের মতে, মানুষ যখন আধ্যাত্মিকতার শীর্ষে আরোহণ করে তখন সে ঈশ্বর(“আনাল হক”) হয়ে যায়। এর অর্থ হিসাবে তারা বলে “আমিই একমাত্র সত্য বা ঈশ্বর।” এটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে তারা একটি বহুল প্রচলিত জাল হাদিসের শরণাপন্ন হয়। তারা বলে, “মান আরাফা নাফস্ ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু” অর্থাৎ যে নিজেকে চিনেছে সে তার রবকে জেনেছে। হাদিস তো নয়ই, উল্টো এর সাথে ইসলামের সম্পর্ক অনুপস্থিত। [সিলসিলাতুদ্দাইফা (১/১৬৫), আসরারুল মারফুয়া (পৃ:৮৩)]
এছাড়া ঈশ্বরের অবস্থানের ব্যাপারে তারা সর্বেশ্বরবাদী। একাত্মবাদী বললে আরো ভালো হয়। অর্থাৎ ঈশ্বর এবং বিশ্বজগৎ অভিন্ন দুই সত্তা।
ঈশ্বর জগতে এবং জগৎ ঈশ্বরে অবস্থিত বটে এবং সমস্ত জগৎ ঈশ্বরও বটে… [বাংলার বাউল, পৃ.৪৯২-৪৯৩, ৪৮২, ৪৮৯]
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডঃ আনোয়ারুল কবীর “সূফী বাউল এবং তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব”-এর উপর দীর্ঘ সময় গবেষণা চালিয়েছে। তিনি বলেছেন,
সূফীরা সংসারত্যাগী। প্রসঙ্গত বলা যায়, ইসলামের অধ্যাত্মসাধনার দুইটি ধারা। সাময়িক নিভৃতচারিতা- যেমন হযরত মুহাম্মাদ(সা) আল্লাহর নৈকট্য এবং সত্যসাধনায় গিরিগুহায় সাময়িক সময়কালে নিভৃত জীবন অতিবাহিত করেছেন এবং যেভাবে হযরত মূসা (আ) ৪০ দিন সংসার থেকে দূরে স্রষ্টার ধ্যানে মগ্ন থেকেছেন। এই নিভৃতচারিতা সারা জীবনের জন্য নয়। সংসার সত্যাদর্শে গড়ে তোলার জন্য সাময়িক সংসার ত্যাগ ছিল এক অর্থে শক্তি বা প্রেরণার উৎস। ইসলামের এই অধ্যাত্মসাধনা সংসারবিমুখতায় স্থিতি লাভের জন্য নয়। তাছাড়া ইসলামের এই অধ্যাত্মসাধনা কর্মবাদের উপর গড়ে উঠেছে। অপরদিকে পারস্যের সূফীবাদ বৈরাগ্য জন্ম দিয়েছে যা ইসলামের পরিপন্থী। আল্লাহ সর্বপ্রকার সন্ন্যাস এবং খানকা নির্মাণ নিষিদ্ধ করেছেন। [বাংলাদেশের বাউল, পৃ.৮১-৮২]
আজকে সর্বসাধারণ হয়ত এতকিছু জানে না। কিন্তু যারা এর কর্তা তারা কিন্তু এগুলো খুব ভালো করেই জানে। কাজেই ইস্যু আসলে শরীয়ত বয়াতিকে নিয়ে নয়। ইস্যু আসলে ইসলামকে ব্যবহার করে সমগ্র বাউল, সূফী এবং তদসংশ্লিষ্ট ব্যবসাকে ঘিরে। পরধর্ম নিয়ে তো ইসলাম আক্রমণাত্মক নয়। কিন্তু যখন ইসলামের বেশ ব্যবহার করে একদল লোক ইসলামের দিকেই আঙুল তোলে, আলিমদের সাথে দ্রোহ করে, কুরআন-হাদিসকে কাল্পনিক গালগল্প আকারে তুলে ধরে তখন আমাদের করণীয় কী হওয়া উচিৎ? মানব ধর্ম তো দূরে থাক, এটি কি কোনো ধর্মেরই স্বরূপ হতে পারে? আসলে ধর্ম ব্যবসায়ী কারা?
ইমামগণ বাউলদের মাজার পূজা, পীর পূজা, অবাধ যৌনাচার, দায়িত্বহীন বৈরাগ্য এবং হারাম প্রকৃতির গান-বাদ্যের মাধ্যমে তার প্রচার প্রসারে বাঁধা দেয় দেখে ইমামগণকে তারা কাঠমোল্লা, ভুল ব্যাখ্যা দানকারী এবং মানব ধর্ম বিরোধী প্রমাণের চেষ্টা করে। অথচ বিষয়টি সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের কাজ-কর্মকে হারাম বলার কারণে ১৩০০টাকায় দায়িত্বরত মসজিদের গরীব মুয়াজ্জিনকে তারা গালমন্দ করে, ধর্ম ব্যবসায়ী বলে। অথচ ১৩০০ টাকায় একজন “ব্যবসায়ী” কিভাবে সারা মাস চলে সে প্রশ্ন জাগে না। এদিকে দিনের পর দিন তারা মাজারে সিন্নি খাচ্ছে, পৈতা-তাবিজ বিক্রি করছে, গুরুর কবর সিজদা করার জন্য হাদিয়া নিচ্ছে, বল্গাহীন নারীভোগ দ্বারা সিদ্ধি লাভ করতে চাইছে, কুসংস্কার-ভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, নিজেকে খোদা মনে করছে এবং দিনশেষে দাবি করছে তারাই প্রকৃত আধ্যাত্মিক ইসলামের ধারক ও বাহক!
আমি যে প্রগতির সংজ্ঞা জানি তাতে তো ভণ্ডদের জন্য কোনো জায়গা নেই। মুক্তমন বলতে যা বুঝি তাতে তো অসত্যের প্রচারকে অধিকার দেওয়ার কথা বলা নেই। মানব ধর্মের দাবি তো প্রতারক চক্রের পাশে অবস্থান নিয়ে ধর্ম ব্যবসায়ীদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রত্যাশা নয়!
আসলে ইসলামকে চিনতে হলে কিতাব এবং তদানুযায়ী ব্যক্তির আমল ও আখলাক পরখ করাই যথেষ্ট। কিন্তু এখানে বিষয় আসলে ইসলামের হালাল-হারাম নিয়েও নয়। শরীয়ত সরকার বাউল এবং সূফী ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। তার কিছু কথায় সত্য এবং বাকি পুরোটাই মিথ্যা মিশ্রিত। উদ্দেশ্য হলো ইসলামকে সামনে রেখে তাদের নিজস্ব মতবাদ প্রচার ও প্রসার। (১) গান বন্ধ হলে এবং (২) তারা ইসলাম থেকে বিচ্যুত প্রমাণ হলে তাদের ধর্মই বন্ধ হয়ে যাবে। এজন্য মানুষকে যুগে যুগে আলিম-উলামাদের সান্নিধ্য থেকে দূরে নেওয়া জরুরি। তাদেরকে অমানবিক, স্বেচ্ছাচারী, গোঁড়া প্রমাণ করা জরুরি।
শরীয়ত সরকার তথা প্রতারক বাউলদের দাবিগুলোকে ইসলামি দলিল দ্বারা খণ্ডন করার চেয়েও তাদের উৎস থেকে তাদেরকে ধোঁকাবাজ এবং ভ্রান্ত প্রমাণ করা প্রয়োজন বোধ করেছি। বিচারবুদ্ধি, উপলব্ধি আমার হাতে নেই, এটা যার যার। আমি নমুনা পেশ করতে পারি, তাই করেছি।
আমার উম্মতের কিছু লোক মদের নাম পাল্টিয়ে তা পান করবে এবং বাদ্যযন্ত্র সহকারে গান করবে।… এমন কিছু লোক সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, পুরুষদের রেশমি পোশাক, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল বলে মনে করবে। [ইবনে মাজাহ ৪০২০, সহীহ ইবনে হিব্বান ৬৭৫৮, তিরমিযী ২২১২, বুখারী ৫৫৯০]
স্বাধীনতার এত বছর পর নিশ্চয় আমরা ইতিহাসকে পরিবর্তন করে দিব না? প্রতিষ্ঠিত সত্যকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জে সে নিজেই পতিত হয়। কারণ সে সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বলে দাবি জানাচ্ছে।
শেখ সাহেব যে স্বাধীনতার ঘোষক এ কথার সত্যতা প্রমাণের জন্য তার সশরীরে উপস্থিত থাকা জরুরি নয়। দোকানের কর্মচারীর হাত থেকে পণ্য বুঝে নিলে কিন্তু কর্মচারী প্রস্তুতকারক হয়ে যায় না। প্রস্তুতকারক সশরীরে হাজির না থাকায় ওই পণ্য প্রস্তুতকারকের নয় জাতীয় দাবি অমূলক। কুরআনের কোথাও লিখা নেই যে আমাকে সুদ দেওয়া যাবে না। কিন্তু এব্যাপারে সুদের আয়াতগুলোই যথেষ্ট। কোথাও ঈদের সালাত পড়ার কথা লিখা নেই। কিন্তু এ ব্যাপারে হাদিস থাকাই যথেষ্ট।
তাই শরীয়ত বয়াতিরা যখন হারাম জাতীয় গান-বাদ্য শ্রবণের বিপরীতে হুজুরদেরকে গালমন্দ, বিদ্রুপ এবং কটাক্ষের মাধ্যমে জনগণকে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে অনুপ্রাণিত করে তখন একটি ঘটনা মনে পড়ে যায়-
ইবনে হারিস বিদেশ থেকে একটি গায়িকা গোলাম খরিদ করে এনে তাকে গান-বাজনায় নিয়োজিত করল । কেউ কুরআন শ্রবণের ইচ্ছা করলে তাকে গান শোনানোর জন্য সে গায়িকাকে আদেশ করত এবং বলত মুহাম্মদ তোমাদেরকে কুরআন শুনিয়ে নামায, রোযা এবং ধর্মের জন্য প্রাণ বিসর্জন দেওয়ার কথা বলে। এতে শুধু কষ্টই কষ্ট। তার চেয়ে বরং গান শোন এবং জীবনকে উপভোগ কর। [তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন, পৃ.১০৫২]
সূফী বাউল আর ইবনে হারিসদের মধ্যে কি অদ্ভুত মিল তাই না? ঠিক এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই নাযিল হলো সূরা লুক্বমানের ৬ নং আয়াত
আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য অসার কথা-বার্তা খরিদ করে, আর তারা ঐগুলোকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে; এদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি।
হযরত ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। সাহাবীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বড় ফিক্বহ পণ্ডিত। জীবিত থাকলে হয়ত টুপি-পাগড়ী পরা ইমামদের সাথেই আজকে তার উঠা-বসা হত। তবে উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় তিনি বলেছিলেন,
আল্লাহর শপথ, যিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, ‘অসার কথা-বার্তা’ হলো গান। [তাফসীরে ইবনে কাসীর ৩/৪৪১]
যে সূরা সাবার ৯নং আয়াতে শরীয়ত সরকারেরা দাঊদ নবীকে(আ) বংশী বাজাতে দেখে সেখানে লেখা আছে,
তারা কি দেখে না, তাদের সামনে ও পিছনে, আকাশ ও পৃথিবীতে যা আছে? আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে মাটিকে দিয়ে গিলিয়ে দিতে পারি বা আকাশের এক খণ্ড তাদের উপর পড়তে দিতে পারি। অবশ্যই এতে সেই বান্দাদের জন্য নজির রয়েছে যারা আল্লাহর দিকে ফেরে।
অবশ্য এর ঠিক আগের আয়াতেই আছে
সে কি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে অথবা সে কি উন্মাদ?
বস্তুতঃ যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তারা শাস্তি ও ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
মুসলিম মিডিয়া ব্লগের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ তা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ব্লগ পরিচালনায় প্রতি মাসের খরচ বহনে আপনার সাহায্য আমাদের একান্ত কাম্য। বিস্তারিত জানতে এখানে ভিজিট করুন।
নিচে মন্তব্যের ঘরে আপনাদের মতামত জানান। ভালো লাগবে আপনাদের অভিপ্রায়গুলো জানতে পারলে। আর লেখা সম্পর্কিত কোন জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে অবশ্যই "ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কমেন্ট করুন"।